অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা আসলেই কি নাজায়েজ?
কোন কিছুকে হারাম ফতোয়া দিতে গেলে অবশ্যই এর স্বপক্ষে কুরআন-হাদীসের দলিল লাগবে। যদিও কোরআন হাদিসে এরকম একটি দলিল নেই যে, ওযু ব্যতীত কুরআন স্পর্শ করা যাবে না।
অনেকে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে "অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা যাবে না" -এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করে থাকে।
🔆 যুক্তি - ১.
আল-ওয়াকিয়া (৫৬), আয়াত (৭৭-৭৯)
اِنَّهٗ لَقُرۡاٰنٌ كَرِیۡمٌ ۙ
অবশ্যই তা সম্মানিত কুরআন,
فِیۡ كِتٰبٍ مَّكۡنُوۡنٍ ۙ
(যা লিখিত আছে) সুরক্ষিত কিতাবে,
لَّا یَمَسُّهٗۤ اِلَّا الۡمُطَهَّرُوۡنَ ؕ
পূত-পবিত্র (ফেরেশতা) ছাড়া (শয়ত্বানেরা) তা স্পর্শ করতে পারে না,
তারা এই আয়াতগুলো উপস্থাপন করে যুক্তি দেয় যে যেহেতু আল্লাহতালা এখানে বলেছেন পবিত্র ছাড়া কোরআন কেউ স্পর্শ করতে পারে না, সুতরাং অবশ্যই আমাদের অজু করে কোরআন ধরতে হবে।
জবাব : প্রথমাত, এই আয়াত গুলো যে কোরআনের কথা বলা হয়েছে তা মুসহাফ নয় বরং তা হল লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত কোরআন। পবিত্র ব্যক্তি বলতে এখানে ফেরেস্তাদের বোঝানো হয়েছে, মানুষকে নয়। -দলিলঃ তাফসীর ইবনে কাসীর ।
দ্বিতীয়ত, যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই এই আয়াতে ধরেও নেই আয়াতের ত্বহির বা পবিত্র শব্দ দ্বারা মানুষকেই বোঝানো হয়েছে তবুও এই আয়াতগুলোর আলোকে তাদের প্রদত্ত যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ কোন মুসলিমের ওযু না থাকা অবস্থায় যে সে অপবিত্র বিষয়টি এরকম নয়। শুধুমাত্র গোসল ফরজ হলেই একজন মুসলিম অপবিত্র হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন :
আল-মা’ইদাহ ৫:৬
হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন সলাতের জন্য উঠবে, তখন তোমাদের মুখমন্ডল এবং কনুই পর্যন্ত হস্তদ্বয় ধৌত করবে। আর তোমাদের মাথা মাসেহ করবে এবং পা গোড়ালি পর্যন্ত ধৌত করবে। তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাক তবে বিধিমত পবিত্রতা অর্জন করবে।
আল্লাহতালা ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ার জন্য অজু করতে বলেছেন। কিন্তু যদি কেউ অপবিত্র থাকে তাহলে তার কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় শুধু অজু করে নামাজ আদায় করলে চলবে না। সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করতে হবে অর্থাৎ গোসল করতে হবে।
এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে ওযু পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম নয় বরং গোসলই পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম।
সুতরাং উক্ত আয়াতের পবিত্র শব্দ দ্বারা অজু করাকে বুঝানো নিতান্তই হাস্যকর !!!
💥 যুক্তি-2 :
তারা কিছু হাদীস উপস্থাপন করে যে হাদিস গুলোতেও কোরানের উক্ত আয়াত এর মতই ত্বহির ( পবিত্র) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
🌻 এটি আগেই প্রমাণ করেছি যে তহির / পবিত্র শব্দ দ্বারা পরোক্ষভাবে ওযু কে নয় বরং ফরজ গোসল কে বোঝায় ।
নামাজের ক্ষেত্রে রাসুল সা. স্পষ্টভাবে বলেছেন যে ওযু ব্যতীত নামাজ কবুল হবে না। কিন্তু কোরআন এর ক্ষেত্রে তিনি কখনো বলেননি যে ওযু ব্যতীত কুরআন স্পর্শ করা যাবে না।
যেহেতু ওযু ব্যতীত কোরআন স্পর্শ করা নাজায়েজ হওয়ার স্বপক্ষে কোন দলিল নেই সুতরাং ওযু ব্যতীত কুরআন স্পর্শ করা জায়েজ। কিন্তু অপবিত্র অবস্থায় অর্থাৎ যে অবস্থায় গোসল ফরজ হয় সে অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা জায়েজ নেই। কারণ এর স্বপক্ষে অনেকগুলো সহিহ হাদিস রয়েছে।
আল্লাহ , আমাদের হক বুঝার তৌফিক দান করুন। আমিন।
ভিডিয়োতে আলোচনা করেছেন:
১. আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ হাফি.
২. ড. জাকির নায়িক হাফি.
৩. মুফতি আমির হামজা হাফি.
ভিডিয়ো থেকে আরো যা জানতে পারবেন:
১. অমুসলিমদের আরবী কোরআন দেওয়া যাবে কিনা
২. অমুসলিমকে কোরান দিলে তার দ্বারা কোরআনের অসম্মান হওয়ার সম্ভাবনা থাকা সত্তেও তাকে কোরআন দেওয়া যাবে কিনা
৩. অপবিত্র অবস্থায় কোরআন পাঠ করা যাবে কিনা
#অযুব্যতিতকোরআনস্পর্শকরা
Негізгі бет অজু ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা কি জায়েজ ? ওযু ব্যতিত কোরআনের মুসহাফ হাত দিয়ে ধরে তিলাওয়াত করা যাবে কি ?.
Пікірлер