আমি মনে প্রানে ভেতো বাঙালী আর বাঙালী রা একটু বেশি ঘুরতে ভালোবাসে । তাই আমি ও খুব বেশি দিন ঘরে বসে থাকতে পারিনা। তাই আবার আমি আর আমার বাইক সঙ্গী নিয়ে বের হয়ে পরলাম আর এক নতুন অজানা জায়গার উদ্দেশ্যে। জায়গাটা আবশ্য কলকাতার ভিতরেই বলা চলে তবে কলকাতা থেকে একটু দূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে আছে।
আজকের পর্বে #অচিপুর সহ সম্পূর্ণ বজবজ ভ্রমণের ছোট্ট একটি ভিডিও তুলে ধরলাম মাত্র। সম্পূর্ণ ভিডিওটা দেখতে অনুরোধ করবো কারন একটি ভিডিওর মধ্যেই অনেকগুলি স্পট দেখানো হয়েছে এবং তার সাথে তার ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে।
আছিপুর কলকাতা থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দক্ষিণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্তরগত হুগলী নদীর তীরে একটি শান্ত ছোট গ্রাম। এই জায়গাটির একটি আকর্ষণীয় ইতিহাস রয়েছে এবং এটি দেশের প্রথম সরকারি চীনা বসতির স্থাপন কারি টং আচেয় নামে রাখা হয়েছে। বর্তমানে এই জায়গাটি গুগুল ম্যাপে “বিড়লাপুর রিভার সাইট পিকনিক স্পট” হিসাবে দেখানো হয়েছে এবং স্থানীয়রা একে আছিপুর “বারুদ ঘর” বলে ডাকে। এই জায়গাটি প্রথমে আমাদের নজরে আনে প্রবীণ ব্লগার রঞ্জন দত্ত।এগুলি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে অনেক তথ্য উঠে আসে।
আসুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক এই আছিপুরের না জানা ইতিহাসের কথা।
ইতিহাস ঃ-
ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা যায় ১৮ শতকের শেষের দিকে টং আচেয় নামে একজন চীনা চা ব্যাবসায়ি হুগলী নদীর তীরে বজবজের নিকট এই স্থানে উপস্থিত হয়।তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিং আচেয় কে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে বার্ষিক ৪৫০০০ টাকা ভাড়ায় বজবজ থেকে ৪০০ মাইল দক্ষিণে ৬৫০ বিঘা জমি দেয় চিনি কারখানা করার জন্য।এই জমি পাবার পর আচেয় সেখানে একটি চিনি কারখানা ও বেতের বাগান তৈরি করে।এই সব কাজ করার জন্য আচেয় তার সাথে চীনা শ্রমিকের একটি বড় দল লে এই ভারতবর্ষে নিয়ে এসেছিলো। এই ভাবে ভারতে প্রথম চীনা বসতি স্থাপিত হয়। তবে টং আচেয় মারা যাওয়ার পর তার চিনির কারখানা ও বন্ধ হয়ে যায়। তার সাথে সাথে চীনা শ্রমিক গুলি কলকাতায় চলে আসে। পরবর্তী কালে এই জায়গাটি টং আচেয়র নাম অনুসারে আছিপুর নাম দেওয়া হয়।
এই আছিপুর ভারত সরকারের কলকাতা বন্দরের সাথে ও যুক্ত।কারন অতীতে ব্রিটিশ জাহাজ গুলি কলকাতা বন্দরে ঢোকার আগে তাদের বারুদ এই আছিপুরের বারুদ ঘর বা আছিপুর গান পাউডার ম্যাগাজিন হাউসে রাখতে হত। কেবলমাত্র জাহাজ গুলির জরুরি কল এবং সিগন্যাল এর জন্য কেবল ১০০ পাউন্ড গান পাউডার বহন করার অনুমদিত ছিল। আবার জাহাজ গুলি ফেরার সময় তাদের জমা রাখা বারুদ এই বারুদ ঘর থেকে সংগ্রহ করত। বেঙ্গল গেজেটিয়ার অনুসারে লুইস সিডনি, স্টুয়ার্ড ওম্যালি বলেছেন যে এই বিধান লঙ্ঘন করলে সেই জাহাজের উপর জরিমানা করা হত। এই শর্ত লঙ্ঘন কারি বেশ কিছু জাহাজ কে জরিমানা করা হয়েছিল। জাহাজ গুলি যদি বেশি পরিমান বারুদ বহন করে বন্দরে ঢোকে তাহলে দুর্ঘটনা হবার সম্ভবনা থেকে যায় তাতে শহর ও বন্দর দুই বিপদের মধ্যে পড়ে, তাই এই বিধি নিষেধ করাছিল।
বর্তমানে এই বারুদ ঘর গুলি খুবই অবহেলায় পড়ে আছে, আর প্রায় ধবংসপ্রাপ্ত। এই জায়গাতে প্রবেশ করলে আপনি দেখতে পাবেন প্রথমে ৩ টি বিল্ডিং , এই তিনটি বিল্ডিং এর চারপাশে হয়ত প্রাচির দিয়ে ঘেরা ছিল আর এই প্রাচীরের ৪ কনে গার্ড হাউস বাঁ পিল বক্স ও ছিল। যার তিনটি এখন ও দাড়িয়ে আছে। কিন্তু সেই প্রাচীর এখন আর নেই আছে শুধু ওই ৩ টি গার্ড হাউস। এই তিনটি বিল্ডিং এর কিছু দূরে আরও দুটি বিল্ডিং আপনারা দেখতে পাবেন। তবে এই বিল্ডিং গুলি একটু অন্য রকম কারন এই দুটি বিল্ডিং এ দুটি করে জানালা আছে প্রবেশ দ্বারের সাথে, কিন্তু আগের গুলিতে কেবল মাত্র দু দিকে একটি করে প্রবেশ দ্বার আছে শুধু , জানালা নেই । বর্তমানে এই দুটি বিল্ডিং এর ভিতরের দেওয়ালে স্থানীয়রা ঘুঁটে দেবার কাজে লাগায়।
এই ২ টি বিল্ডিং এর থেকে প্রায় ৫০ মিটার পশ্চিমে একটি ২ তল বাড়ির ধ্বংসাবশেষ আছে । এটি আনুমান করা যায় যে এই বাড়িটি ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তার বাড়ি হিসাবে এবং টার সাথে বন্দুকের কাজকর্মের অফিস হিসাবে ব্যবহার করত । তবে আজ এই ২তল বাড়ি টি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আছে । এই বাড়ি টি ছাদ ও মেঝে দুটিই আর নেই শুধু মাত্র চারিদিকের দেওয়াল আছে । আর এই পুর জায়গাটি তে বেশ কিছু বড় বড় মরা গাছ একাকি দাঁড়িয়ে আছে । এই গাছ গুলি অঞ্চলটি কে এক আলাদা রূপ দান করেছে ।
কিভাবে যাবেন ঃ - সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের হওড়া জংশন থেকে মেদিনীপুর না পাঁশকুড়াগামী যেকোনো ট্রেনে বাউড়িয়া স্টেশনে নেমে , বাউড়িয়া ফেরিঘাট পেরিয়ে সহজেই যানজট ছাড়া আসা যায় এখানে।
*যদি আপনারা শিয়ালদাহ থেকে ট্রেন এ আসেন তো বজবজ লোকালে করে বজবজ স্টেশানে পৌঁছাবেন । স্টেশানের বাইরে থেকে অটো ধরে চরিয়াল পৌঁছাবেন। ওখান থেকে অটো বা ম্যাজিক গাড়ি করে আছিপুর ওখান থেকে টোটো ধরে বিড়লা পুর রিভার সাইট পিকনিক স্পট।
*এছাড়া বাসে এলে তারাতলা থেকে বাসে করে আছিপুর। যদি আছিপুরের সোজা বাস না পান তো বাসে করে বজবজ বা চরিয়াল আসতে হবে ওখান থেকে অটো বা ম্যাজিকে করে যেতে হবে। এছাড়া গাড়ি নিয়ে এলে গুগুল ম্যাপে বিরলাপুর রিভার সাইট পিকনিক স্পট লিখলে দেখিয়ে দেবে কি ভাবে যেতে হবে।
----------------------------------------------------------------------------------
Other enquiry;
#Old_Budge_Budge_Station
#Koma_Gata_Maru
Tong Achew
Achhipur
Chinese Temple
Achhipur Telegraph Office
#Baroodghar
____________________________________________________________________________________
Gadgets used-
mobile camera--amzn.eu/d/gEuIO1L
Gimble- dl.flipkart.co...
mic-dl.flipkart.co...
Негізгі бет চেনা অচেনা আছিপুর ভ্রমণ। কলকাতার পাশেই বৈচিত্র্যের খনি। ACHI PUR TRAVEL II BUDGE BUDGE HISTORY II
Пікірлер: 28