০৫ জুন ২০১৯ তারাজ, কাজাকিস্তান:
সাধারণভাবে বলা যায় পৃথিবীর সকল মুসলমানরা এ কিভাবে ঈদ পালন করে। কিন্তু আতশি কাচ দিয়ে দেখলে অনেক সূক্ষ্ম অথচ তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য ধরা পড়ে। কাশ্মীরে ২০১৮ সালে সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়েছিলাম। আরো ইচ্ছা ছিল ঈদুল ফিতর কিভাবে পালন করে তা দেখা। দেখলাম মসজিদে ঈদের নামাজ হয়, শ্রীনগরের কোথাও মাঠের নামাজ পড়ার কোন প্রমাণ পেলাম না। চিন্তায় পড়ে গেলাম, মনের ভেতরে উত্তর বের করলাম; এখন হয়তো শীতকাল না কিন্তু শীতকালেও তো ঈদ পড়ে। তাই এরা মসজিদে নামাজ পড়ে। ঈদের নামাজের আগে পরে সুযোগ পেলেই মোনাজাত করে। কেউ কেউ মাথা থেকে টুপি খুলে উঁচু করে বাটির মতো ধরে যেন আল্লাহ তাআলা কিছু একটা তার ভিতরে দিতে পারেন। তাদের অনেক কিছু চাহিদা আছে কিন্তু পান না তাই মোনাজাতের ছড়াছড়ি।
আসি কাজাকিস্তানের কথায়-এখানে ঈদ হয়, কোথায় ঈদের নামাজ হয় এবং কখন হয় সেটা বের করতে ঘাম ছুটে গেল। ঈদ শব্দ টা বোঝাতে ৪০ মিনিট লেগে গেল তাও হোটেল স্টাফ এর কাছে। সকাল সাড়ে ছয়টায় ঈদের নামাজ, ফজরের নামাজের সাথে জুড়ে দেওয়া আর কী। সুপার মার্কেট থেকে শুরু করে কোথাও কোন ঈদ শব্দ বা চিহ্ন নেই, চাঁদ দেখা তো দূরের কথা। নামাজ পড়তে গিয়ে দেখা গেল মসজিদের অবস্থান পূর্ব-পশ্চিম না তবে পশ্চিম মুখী হয়ে সবাই নামাজ পড়ে। মাঠে আসার সময় কোন দোয়া দরুদ পড়ে না, নতুন কাপড় চোপড় পরে না। ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন কাপড় চোপড় কিনে না। বেশিরভাগ এর মাথায় টুপি নাই। অনেকে জুতো পরে নামাজ পড়েন তাও হয়তো শীতের জন্য ভেবে নেয়া যেতে পারে। ঈদের নামাজ পড়ে যে যার মত মসজিদ থেকে হন হন করে বেরিয়ে যান। কোন কোলাকুলি নেই, যেন কোথায় কাজে ব্যস্ত, যেন কেউ কাউকে চেনে না- ঈদের ময়দান তো না যেন হাশরের ময়দান। ঈদের দিনে বোঝার কোন উপায় নেই যে এটা ঈদের দিন। ঈদের দিন ছুটি দেয়া হয় না। সাদা পোশাকে পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগ। হান্টিংটন বলেছেন ইসলাম সুপেরিয়র কালচার। কিন্তু এখানে মনে হয়েছে পুরনো বস্তাপচা তাই ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে।
রাজনীতি, কালচার, ল্যেগেছি ধর্ম কে কিভাবে প্রভাবিত করে, নিয়ন্ত্রণ করে তা বাড়ি বসে উপলব্ধি করা সম্ভব না। বেরিয়ে পড়তে হবে দেশে দেশে, ভিন কালচারের মানুষের মাঝে, হোক না সে একই ধর্মের। ক্ষমতা আর রাজনীতিই শেষ কথা।
Негізгі бет ঈদ-কাজাকিস্তান স্টাইল
Пікірлер: 228