Historical place - Mahasthangarh | ঐতিহাসিক স্থান - মহাস্থানগড়
মহাস্থানগড়
বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হচ্ছে মহাস্থানগড়। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে মহাস্থানগড়ই সর্বাধিক প্রাচীন।
অবস্থান:
বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও সর্ববৃহৎ নগরী পুণ্ড্রনগরের অবস্থান। ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই পুন্ড্রনগরই হচ্ছে মহাস্থানগড়। এর পূর্বদিকে করতোয়া নদী প্রবাহিত। প্রাচীন এ সভ্যতাটি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১৫০০ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১৪০০ মিটার বিস্তৃত।
#historical_place #mahasthangarh #historicalplace
উৎপত্তিঃ
খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক দ্বিতীয় শতকে মহাস্থান ব্রাহ্মলিপিতে 'পুন্দনগল' এর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃবিজ্ঞানীদের ধারণা, এ পুন্দনগলই হচ্ছে প্রাচীন পুণ্ড্রের রাজধানী পুণ্ড্রনগর বা মহাস্থানগড়।
মৌর্য সম্রাট অশোকের একটি শিলালিপি ও চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং- এর বর্ণনায় পুণ্ড্রনগরের উল্লেখ রয়েছে । হিউয়েন সাং- এর বর্ণনা থেকেই আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ সালে মহাস্থানকে পুণ্ড্রনগর বলে চিহ্নিত করেন।
১৯৩০ সালে ব্রাহ্মী অক্ষরে বাংলার প্রাচীনতম শিলালিপি থেকেও প্রমাণিত হয় যে, আজকের মহাস্থানগড়ই বাংলার প্রাচীনতম শহর 'পুণ্ড্রনগর'। বৌদ্ধসভ্যতার প্রাচীনতম ধ্বংসাবশেষ এই পুণ্ড্রনগর বা মহাস্থানগড় মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও বিভিন্ন হিন্দু সামন্তরাজাদের প্রাদেশিক রাজধানী ছিল।
মহাস্থানগড়ের বিখ্যাত স্থানসমূহঃ
মহাস্থানগড়ের বিখ্যাত স্থানসমূহ হল- মহাস্থানগড় জাদুঘর, মাহীসওয়ার মাজার শরীফ, পরশুরামের প্রাসাদ, শীলাদেবীর ঘাট, জিউৎকুন্ড কুপ, মানকালির কুণ্ড, লক্ষীন্দর/গোকুল মেধ , গোবিন্দ ভিটা এবং বৈরাগীর ভিটা সহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থান।
প্রাচীরবেষ্টিত এ প্রাচীন নগরীর দৈর্ঘ্য ৫০০০ ফুট, প্রস্থ ৪৫০০ ফুট এবং চারপাশের সমতল ভূমি থেকে প্রায় ১৫ ফুট উঁচু। প্রাচীন নগরীটি দক্ষিণ পশ্চিম ও উত্তরে পরিখা দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। মূল নগরীর বাইরে প্রায় ৫ মাইল পর্যন্ত শহরতলী ছিল।
১৯২৮-২৯ সালে কে.এন দীক্ষিতের তত্ত্বাবধানে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখানকার তিনটি ঢিবিতে খননকার্য পরিচালনা করে। এগুলো হচ্ছে বৈরাগীর ভিটা, গোবিন্দ ভিটা এবং মোনির ঘোন। ষাটের দশকের প্রথম দিকে এখানে আবার খননকার্য পরিচালনা হয়। তখন আবিষ্কৃত হয় পরশুরামের প্রাসদ, খোদাই পাথর ভিটা এবং মানকালীর কুণ্ড।
মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত প্রত্নসামগ্রী:
মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের মাধ্যমে বহু প্রাচীন নিদর্শন বা প্রত্নসম্পদ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে মধ্যে পাথরের বিষ্ণুমূর্তি, সোনার অলংকার, আংটি ও বালা, পোড়ামাটির মূর্তি ও খেলনা, পোড়ামাটির সিল, মুদ্রা, প্রদ্বীপ, বিভিন্ন আকারের বোতাম, নানা রঙের মাটির পাত্র, থালা-বাসন, রান্নার হাড়ি-পাতিল, তামা ও ব্রোঞ্জের গহনা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
এখানকার স্থাপত্য শিল্প, প্রাচীরের গায়ে জ্যামিতিক নকশা, সিঁড়ি প্রভৃতি প্রাক-মোগল আমলের মুসলিম ঐতিহ্যের ইঙ্গিতবাহী। এখানে প্রাক-মোগল আমলের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ, আরবীয় সুফি-সাধক সুলতান মাহীসওয়ার বলখীর মাজার এবং মসজিদ রয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় মহাস্থানগড় জৈন, বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতির সংমিশ্রন।
মহাস্থানগড়ের প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহের গুরুত্বঃ
প্রাচীন বাংলার তথ্য উদ্ঘাটনে মহাস্থানগড়ের প্রত্নসম্পদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় ১৫ শতাব্দী পর্যন্ত এখানে একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। এই সভ্যতায় বৌদ্ধ এবং হিন্দু সংস্কৃতির প্রভাব ছিল।
খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতকের পরে ক্ষুদ্র কক্ষবিশিষ্ট আবাসন নির্মাণপদ্ধতি প্রাচীন বাঙলার নিজস্ব স্থাপত্যকৌশলের প্রমাণ হাজির করে। বৌদ্ধধর্মের ওপর ব্রাহ্মণ্যধর্মের বিজয় বার্তাকে ধারণ করে মহাস্থানগড়ের একটি মূর্তি নির্মিত হয়েছে। আবিষ্কৃত প্রস্তরমূর্তিগুলোতে বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্মের প্রভাব প্রকট।
আবার সুলতান বলখী মাহীসওয়ারের মাজার মুসলিম আমলের নিদর্শন বহন করে। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশের সমাজ ইতিহাস অধ্যয়নে মহাস্থানগড়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
*Follow us on*
Website :
►►►udvash.com
►►►unmeshbd.com
**উদ্ভাস Facebook Page: ► / udvash
**উন্মেষ Facebook Page: ► / unmeshpage
Instagram
► / udvash_unmesh
Linkedin
► / udvashunmesh
Thanks For Watching.
Негізгі бет Historical place - Mahasthangarh | ঐতিহাসিক স্থান - মহাস্থানগড়
Пікірлер: 8