রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐত্যিহবাহী মেট্রোপলিটন শহর। এটি উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় শহর। রাজশাহী শহর পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। পদ্মাপারের রাজশাহী শহরকে পরম মমতায় যুগ যুগ ধরে আগলে রেখেছে টি-বাঁধ (শহররক্ষা বাঁধ)। তবে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ বাঁধ প্রতিবছর বন্যার সময় হুমকির মুখে পড়ে। আজকের ভিডিওতে জানাবো, সবুজে ঘেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাজশাহী শহরকে কীর্তিনাশা পদ্মার গর্ভে বিলীন হতে না দেওয়া একমাত্র বাঁধ টি বাঁধের আদ্যপান্ত ।
রাজশাহীর পদ্মাগর্ভে ইংরেজি অক্ষর T-এর আদলে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বাঁধই টি-বাঁধ। পদ্মা পাড়ের টি-বাঁধটি উম্নুক্ত বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে ব্যাপক পরিচিত এবং জনপ্রিয়। বাঁধটি জন্মলগ্ন থেকে সকলর নজর কাড়ে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে কে না চায়? বাঁধটিতে রয়েছে মনুষ্য সৃষ্ট একটি নয়নাভিরাম বাগান। রাজশাহী পুলিশ লাইন্সের তত্তাবোধনে বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে। বাঁধটির উত্তর পাশে বাড়তি আকর্ষণের জন্য ইট-সিমেন্টের বিভিন্ন জীব জন্তুর ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে বাগানের মধ্যে। এই বাগানটি শুধু রাজশাহীবাসীর নয়, পর্যটকদেরও প্রধান আকর্ষণ। শিক্ষার্থীরও পড়াশুনার ফাঁকে এখানে এসে বাঁধের সৌন্দর্যে মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল করে নিয়ে যায়। প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থীর পদভারে পিষ্ট হয় বাঁধটি। আনন্দ, হই-হট্টোগোল করে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ান দর্শনার্থীরা। আর কাছ থেকে উপভোগ করেন পদ্মার প্রমত্ত রূপ, আবার কখনো বা পদ্মার শান্ত, স্নিগ্ধ, মমতাময়ী রূপ। টি-বাঁধের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ নারিকেল গাছের বাগান ও বাঁধের পাশের ফুল বাগান। এই নারিকেল বাগান ও ফুলের বাগান নগরীর নদীর তীরে আর কোথও নেই। সারি সারি নারিকেল গাছ বাঁধের সৌন্দর্য অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে পরিতাপের বিষয় এই বাঁধ আজ হুমকির মুখে। পদ্মা গর্ভে বিলীন হতে চলেছে বাঁধের অপরূপ সৌন্দর্যের আধার নারিকেল বাগান এবং ফুলের বাগান। সর্বনাশা পদ্মা নারিকেল গাছের সারি থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরত্বে। বড় ধরণের একটা বন্যা হলে ক্ষুধার্ত পদ্মা গ্রাস করে নিতে পারে বাঁধের অপরূপ সৌন্দর্য সহ সমগ্র বাঁধটাকে।
ভরা বর্ষা মৌসুমে পদ্মায় যখন পানি বাড়তে থাকে এবং ভারত ফারাক্কার সব গেট খুলে ( Farakka Barrage ) দেয় তখন হুমকির মুখে পড়ে টি-বাঁধ। মাঝে মাঝে অবস্থা এমনি বেগতিক হয় যে বালুর বস্তা বা জিও ব্যাগ ফেলে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। বর্ষা মৌসুমে একই রকম চিত্র দেখা যয়। কিন্তু এটি কোন স্থায়ী সমাধান নয়। ২০১৬ সালর বর্ষাকালে টি-বাঁধের উত্তরাংশে ভাঙন দেখা গিয়েছিল এবং এর কিছু অংশ দেবে গিয়েছিল। সে ভাঙন এখনো অব্যাহত আছে। পদ্মার পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বাঁধটির ধ্বংস অনিবার্য এবং রাজশাহীর নগরীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
এদিকে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে জমে উঠেছে নৌকা ভ্রমণ। রাজশাহী নগরীর টি-বাঁধ ও বড়কুঠিসহ বিভিন্ন স্পটে রাখা আছে সারি সারি নৌকা। ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে মাঝিরা নৌকা ছাড়ছেন ভরা পদ্মায়। মাঝিরা জানিয়েছেন, বছরের বেশিরভাগ সময় নদীতে পানি কম থাকায় তাদের নৌকা তেমন চলে না। তবে ভরা মৌসুমের কয়েকটা মাস তারা নৌকা চালিয়ে বেশ ভালোই আয় করেন।
Негізгі бет টি-বাঁধ : সর্বনাশা পদ্মা থেকে আগলে রেখেছে রাজশাহী শহরকে !! T Badh || Padma River || Rajshahi ||
Пікірлер: 33