রাতের আঁধারে একটি ছোট্ট পোকার পেছনে মিটিমিটি করে আলো জ্বলছে আর নিভছে, যা সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমরা প্রায় সবাই এই জোনাকি পোকার আলো দেখেছি। কৌতূহল জাগায় জোনাকির দেহে আলো জ্বলছে কেন বা কীভাবে এই আলো জ্বালাচ্ছে তারা? রাতে পথ চলতে কি তারা এ আলোর ব্যবহার করে? জোনাকি পোকার রহস্যময় এই আলো সম্পর্কে জানাচ্ছেন আবরার জাহিন
জোনাকি বিটল শ্রেণির পোকা। এই পোকাকে ইংরেজিতে বলে লাইটিং বাগ বা ফায়ার ফ্লাই। ছোট্ট কালচে বাদামি রঙের এই পোকা দেখতে অনেকটা লম্বাটে গড়নের হয়ে থাকে। লম্বায় প্রায় দুই সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। পাখা আর মাথায় হলুদ লম্বা দাগ রয়েছে। ছয়টি পা, দুটো অ্যান্টেনা, অক্ষিগোলক আর শরীরটা তিন ভাগে বিভক্ত থাকে। এই পোকার পেটের পেছনে রয়েছে আলো জ্বলা অংশটি। প্রতিটি জোনাকি শরীরের শেষ ভাগে একটি করে বাতি নিয়ে ঘোরে। পৃথিবীতে প্রায় ২০ হাজার প্রজাতির জোনাকি পোকার সন্ধান পাওয়া গেছে। জলচর অনেক প্রাণীর এমন আলো জ্বালানোর ক্ষমতা থাকলেও, স্থলচর প্রাণীর মধ্যে জোনাকিই একমাত্র। এরা মূলত নিশাচর প্রাণী এবং নেকটার বা পোলেন খেয়ে বেঁচে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এরা ক্ষুদ্র লার্ভা এবং পতঙ্গও খেয়ে থাকে।
জোনাকি পোকার আলো আবিষ্কারের ইতিহাস খুবই পুরোনো। ফরাসি নাগরিক রেনে আন্তোইন ফেরচল্ট ডি রেউমুর প্রথম এই পোকার আলোর রহস্য উন্মোচন করেছেন। তিনি ১৭২৯ সালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। যেখানে জোনাকি পোকার আলোর রাসায়নিক প্রক্রিয়া বর্ণনা করেছেন। এই আলো তৈরির বায়োলুমিনেসেন্স নামক রাসায়নিক প্রক্রিয়া তিনি ব্যাখ্যা করেন।
জোনাকির দেহে লুসিফেরিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এই লুসিফেরিন অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে আলো উৎপন্ন করে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় বায়োলুমিনেসেন্স। এই আলো তৈরির জন্য এই পোকার দেহে লুসিফেরেজ নামক এনজাইম থাকে। যা লুসিফেরিন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়া করাতে সাহায্য করে। আর বিশেষ প্রক্রিয়ায় জোনাকি পোকা অক্সিজেনের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, যা মূলত মিট মিট করে আলো জ্বালার পেছনে ভূমিকা রাখে। অক্সিজেন সরবরাহের ওপর নির্ভর করে থাকে কখন আলো জ্বলবে এবং নিভবে। এরা যখন অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তখন আলো নিভে যায় এবং অক্সিজেন সরবরাহ করলে বিক্রিয়া শুরু হয়ে আলো জ্বলে ওঠে।
Негізгі бет জোনাকি পোকার গোপন রহস্য একটা পোকা ১ কোটি টাকা || মাওলানা নুর মোহাম্মদ খাতির || Nur Mohammad New Waz
Пікірлер: 2