جزاكم الله احسن الجزا وبارك الله في علمكم واعمالكم
@mdmustafijur3985
5 жыл бұрын
মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর আলোচনা।
@realtablig6709
9 жыл бұрын
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু পোস্টটি পড়ুন অথবা ডাউনলোড করুনঃ “দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান” Link: preachingauthenticislaminbangla.blogspot.ca/…/blog-p…-… দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান প্রশ্নঃ কারও আগমনের সাথে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে কারও আগমনের সাথে উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ একটি বিস্তারিত উত্তর প্রদান করেছেন, শরীয়াহর দলীলের উপর ভিত্তি করে, তাঁর এ মতামত উল্লেখ করা হলঃ “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা খোলাফায়ে রাশেদীনের সমকালীন সালাফগণের কারোরই এই রীতি বা অভ্যাস ছিল না যে তাঁরা প্রতিবার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) দেখামাত্রই উঠে দাঁড়িয়ে যেতেন, যেটা অনেক মানুষ করে থাকে । বরং আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “সাহাবায়ে কিরামের নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপেক্ষা কোন ব্যক্তিই অধিক প্রিয় ছিলো না। অথচ তাঁরা যখন তাঁকে দেখিতেন তখন দাঁড়াতেন না। কেননা, তাঁরা জানতেন যে, তিনি ইহা পছন্দ করেন না”। ( তিরমিযি ২৭৫৪, সহীহ তিরমিযিতে হাদীসটি আলবানী কর্তৃক সহীহ) কিন্তু তাঁরা তাঁর জন্যে দাঁড়াতে পারতেন যে বাইরে থেকে ফিরত, তাকে স্বাগত জানানোর জন্যে, যেমন বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইকরিমা’র জন্য উঠে দাঁড়ান, এবং তিনি আনসারগণকে বলেছিলেন যখন সা’দ বিন মুয়াজ এসেছিলেন, “তোমরা তোমাদের সর্দারের জন্য উঠে দাঁড়াও”; (বুখারী ৩০৪৩, মুসলিম ১৭৬৮)। আর এই ঘটনাটি ছিল যখন তিনি বনু কুরাইজার ব্যাপারে বিচারের রায় প্রদান করতে এসেছিলেন কারণ তারা বলেছিল যে তাঁর রায় তারা গ্রহণ করবে। মানুষের যা করা উচিত তা হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমকালীন সালাফগণের রীতি-পদ্ধতি অনুসরণ করা, কারণ তারা হলেন সর্বোত্তম প্রজন্ম এবং সর্বোত্তম বাণী হল আল্লাহর বাণী, এবং সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পথ নির্দেশনা। কেউ যেন মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির পথ নির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয়, কিংবা শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের পথ নির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে এর থেকে নিকৃষ্ট কিছু অনুসরণ করে। এবং নেতা কিংবা প্রধানগণ যেন সাধারণের মাঝে এমন কোন কিছুর অনুমোদন প্রদান না করেন যে তাকে দেখামাত্রই সাধারণ লোকদের উঠে দাঁড়াতে হবে, বরং মানুষের উচিত হল সহজ-সাধারণ আচরণের দ্বারা তাকে স্বাগত জানানো। আর দূর থেকে ভ্রমণ করে ফিরে এসেছে এমন লোকের ব্যাপারে উঠে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য যদি হয় তাকে স্বাগত জানানো তাহলে তা সুন্দর আচরণ। আর জনসাধারণের রীতিনীতি যদি এমন হয় যে, উঠে দাঁড়ানোর মাধ্যমে আগত ব্যক্তিকে সম্মান দেখানো হয় এবং যদি তারা উঠে না দাঁড়ায় তাহলে সে ব্যক্তি অপমানিত বোধ করে কিংবা সে ব্যক্তি সুন্নাহ অনুসারে আচরণ জানে না, সেক্ষেত্রে আগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানোই অপেক্ষাকৃত ভালো আচরণ, কারণ এর দ্বারা তাদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হতে পারে এবং তাদের অন্তর থেকে ঘৃণা ও বিদ্বেষ দূর করে দিবে। কিন্তু লোকটি যদি সুন্নাহ অনুসারে আচরণ সম্পর্কে অভ্যস্ত থাকে তাহলে উঠে না দাঁড়ানো তাকে অপমানিত করবে না। নবাগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে সেই কথা বলা হয়নি যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইহাতে আনন্দ পায় যে, লোকজন তাহার জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় স্থির হয়ে থাকুক, তবে সে যেন নিজের জন্য জাহান্নামে বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়”। (আবু দাউদ,তিরমিযি ২৭৫৫, আলবানী কর্তৃক সহীহ তিরমিযি)। এর মানে হল (একথা বলা হয়েছে সেই ব্যক্তির জন্যে) কারও জন্য উঠে দাঁড়ানো হল অথচ সেই ব্যক্তি নিজে বসে আছে, নবাগত ব্যক্তিকে স্বাগত জানানোর জন্য উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে এই কথা বলা হয়নি। একারণেই উলামাগণ এই দুই ধরণের উঠে দাঁড়ানোর মধ্যে পৃথকীকরণ করেছে্ন, কারণ যারা নবাগত ব্যক্তিকে স্বাগত জানানোর জন্যে উঠে দাঁড়ায় তারা তার সাথে একইভাবে (দাঁড়ানো) অবস্থায় আছে কিন্তু কোন ব্যক্তি নিজে বসে আছে অথচ লোকেরা তার জন্যে উঠে দাঁড়ায় উভয় ঘটনা এক নয়। সহীহ মুসলিমে প্রমাণিত আছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থতার দরুণ বসা অবস্থায় সালাতের ইমামতি করলেন, তাঁরা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন, তিনি তাঁদের বসতে বললেন এবং বললেন, “পারসিরা যেভাবে একে অপরকে সম্মান দেখায় সেভাবে আমাকে সম্মান প্রদর্শন করো না” [১]। আর তিনি নিজে বসা অবস্থায় তাদেরকে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করলেন, যেন সাহাবাগণের সাথে এতটুকু সাদৃশ্যও না থাকে যেভাবে পারস্য দেশের লোকেরা তাদের নেতাদের জন্য দাঁড়িয়ে অথচ তাদের নেতারা বসে থাকে। পরিশেষে, যত বেশি সম্ভব সালাফগণের আচরণ ও রীতিনীতি অনুসরণ করাই হল সর্বোত্তম আচরণ। যদি কোন ব্যক্তি এতে বিশ্বাস স্থাপন না করে এবং এই ধরণের আচরণে অভ্যস্ত না হয়, এবং যেভাবে (প্রচলিত পদ্ধতিতে) লোকেরা তাকে সম্মান দেখায় সেভাবে সম্মান প্রদর্শন না করাতে যদি সে আরও মন্দ কোন পরিণতির দিকে নিয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে আমরা কম ক্ষতির কাজটি করে বেশি ক্ষতির থেকে নিজেদের রক্ষা করব এবং তাই করব যা ছোট উপকারের চেয়ে বড় উপকার করে থাকে ”। - ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ’র উক্তি সমাপ্ত। যে বিষয়টি এই আলোচনা আরও স্পষ্ট করে তুলতে পারে তা হল, সহীহাইনে আলোচিত কা’ব ইবন মালিকের ঘটনাটি, যখন আল্লাহ্ তাঁর এবং তাঁর দুইজন সঙ্গীর তাওবা কবুল করলেন, যেখানে বর্ণিত আছে, যখন কা’ব মসজিদে প্রবেশ করলেন, তালহা ইবন উবাইদাল্লাহ উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর দিকে দৌড়ে গেলেন এবং স্বাগত জানালেন অভিনন্দিত করলেন আল্লাহর ক্ষমার কারণে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ঘটনাকে প্রত্যাখান করেননি। এই ঘটনা নির্দেশ করে যে, আগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানো, তার সাথে হাত মিলানো এবং স্বাগত জানানো অনুমোদিত। এই বর্ণণাটিও অনুরূপ যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যা ফাতিমার ঘরে প্রবেশ করলেন তিনি তাঁর জন্যে উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর হাত ধরলেন এবং তার নিজের বসার স্থানে তাকে বসালেন। এবং যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ফাতিমা রদিয়াল্লাহু আনহা আসতেন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত ধরতেন এবং তাঁর নিজের বসার স্থানে তাকে বসাতেন। তিরমিযিতে সহীহ রূপে চিহ্নিত। আল্লাহ্ সবচেয়ে ভালো জানেন। Islam Q&A শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
@realtablig6709
9 жыл бұрын
কারও আগমনের সাথে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি? না জানাটা অপরাধ নয় বরং জানতে না চাওয়াটাই অপরাধ কাউকে দাড়িয়ে সম্মান দেয়ার ইসলামী বিধান কি? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে প্রথমত, জাতীয় সংগীত বাজানো কিংবা শ্রবণ করা কি হারাম? জাতীয় সংগীত বাজানো হল নাকি কোন গান বাজানো হল না অন্য কিছু বাজানো হল এতে কোন বিশেষ পার্থক্য নেই। দ্বিতীয়ত, বিনয়াবনত ও ভক্তি সহকারে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করা কারো জন্যেই মানানসই নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটি আল্লাহর জন্যে করা হয়ে থাকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, “আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও”। [সূরা বাকারাহ ২:২৩৮] আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন, তাঁর বড়ত্ব ও মর্যাদার কারণে, মানুষের পরে অন্যতম শেষ্ঠ সৃষ্টি (ফেরেশতাগণ) শেষ বিচারের দিনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবেন এবং কেউ কোন কথা বলবেন না যতক্ষণ না আল্লাহ কাউকে কথা বলার অনুমতি প্রদান করেন। ( অর্থাৎ তারা দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করবেন)। মহান আল্লাহ বলছেন, “যেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে। দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দিবেন, সে ব্যতিত কেউ কথা বলতে পারবে না এবং সে সত্যকথা বলবে”। [সূরা নাবা ৩৮] যে কেউ কোন সৃষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি এই দাবী করে যে তাকে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, তার মানে হল সে সেই ব্যক্তি বা বস্তুকে এমন একটি অধিকার প্রদান করল যা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার হক বা অধিকার। এজন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে লোকেরা তার সম্মানে দাঁড়িয়ে যাক তাহলে সে যেন জাহান্নামে নিজের বাসস্থান করে নেয়”। (তিরমিযি, ২৭৫৫; হাদীসটি সহীহ, আলবানী একে সহীহ বলেছেন সহীহ আল তিরমিযিতে) এর কারণ, এটি এমন একটি সম্মান এবং শক্তি ও গর্বের অংশ যা কেবলমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অধিকার। (দ্র তাফসীর আল-তাহির ওয়াল-তানভির, আল তাহির ইবন আশুর কর্তৃক ১৫/৫১) খলিফা আল মাহদি মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলেন এবং সেখানে উপস্থিত সব লোকেরা দাঁড়িয়ে গেল কিন্তু ইমাম আবি যি’ব দাঁড়ালেন না। তাকে একথা বলা হল; দাঁড়াও, ইনি আমিরুল মুমিনিন। তিনি বললেনঃ লোকেদের কেবলমাত্র তাঁর সম্মানে দাঁড়ানো উচিত যিনি সমস্ত জগতসমূহের প্রভূ। আল মাহদি বললেনঃ “তাঁর জন্যেই তা, আমার মাথার সবগুলো চুলও যেন দাঁড়িয়ে যায়”। সিয়ার আ’লাম আল-নুবালা’ (৭/১৪৪) স্টান্ডিং কমিটির সম্মানিত আলেমগণের নিকট জানতে চাওয়া হয়েছিল; জাতীয় পতাকা কিংবা জাতীয় সংগীতের প্রতি দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের অনুমতি আছে কি? তারা জবাবে বলেছেনঃ একজন মুসলমানের জন্যে এই অনুমতি নেই যে, সে জাতীয় সঙ্গীত কিংবা পতাকার জন্যে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করবে, বরং এটি একটি নিন্দনীয় বিদ’আত যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় প্রচলিত ছিল না, আর খুলাফায়ে রাশেদিনের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) সময়েও এর কোন প্রচলন ছিল না। এবং এটা পরিপূর্ণ তাওহীদের শিক্ষা ও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পরিপন্থী। এটি এমন একটি মাধ্যম যা শিরকের দিকে চালিত করে এবং কুফফারদের নিন্দনীয় আচার অনুষ্ঠানের অনুকরণের দোষে দুষ্ট, উপরন্তু এর দ্বারা তাদের রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি তারা যেভাবে সম্মান দেখায় ও তাদের আচার অনুষ্ঠানের অনুসরণ করা হয়ে থাকে। আল্লাহর রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের অনুকরণ করতে নিষেধ করেছেন। আর আল্লাহই হলেন সকল শক্তির উৎস। আল্লাহ তাঁর রাসূল ও তাঁর পরিবার এবং সাহাবাগণের উপর দরুদ ও সালাম বর্ষণ করুন। ফাতাওয়া আল লাজানাহ আল দায়িমা (১/২৩৫) আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। কোন ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করা সম্পর্কিত তিনটি হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবায়ে কিরামগণ সরাসরি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ব শরীরে কোন মজলিসে আগমন হলেও দাঁড়াতেন না। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'সাহাবায়ে কিরামের নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপেক্ষা কোন ব্যক্তিই অধিক প্রিয় ছিলো না। অথচ তাঁরা যখন তাঁকে দেখিতেন তখন দাঁড়াতেন না। কেননা, তাঁরা জানতেন যে, তিনি ইহা পছন্দ করেন না'। (তিরমিযি, এই হাদীসটি হাসান ও সহীহ) মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ইহাতে আনন্দ পায় যে, লোকজন তাহার জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় স্থির হয়ে থাকুক, তবে সে যেন নিজের জন্য জাহান্নামে বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়'। (আবু দাউদ) আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম লাঠিতে ভর করে ঘর হতে বাইরে আসলেন, আমরা তাঁর সম্মানে উঠে দাঁড়ালাম। তখন তিনি বললেন, 'তোমরা আজমী (অমুসলিম) লোকদের ন্যায় দাঁড়াইও না। তারা এইভাবে দাঁড়াইয়া একে অপরকে সম্মান প্রদর্শন করে'। (আবু দাউদ) তবে কোন প্রয়োজনে দাঁড়ানো, যেমন সা'দ (রা) অসুস্থ ছিলেন বিধায় তাঁকে সওয়ারী থেকে নামতে লোকেরা সাহায্য করেছেন, তা দূষণীয় নয়।আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন বনু কুরাইযা সা'দ ইবনে মুয়ায রাদিয়াল্লাহুর ফয়সালায় সম্মতি প্রকাশ করল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ডেকে পাঠালেন। আর সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহু হুজুরের গৃহের নিকটেই অবস্থান করছিলেন। তিনি একটি গাধার উপরে সওয়ার হইয়া আসিলেন। যখন তিনি মসজিদের নিকটে পৌঁছিলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনসার সাহাবীদের লক্ষ্য করে বললেন, 'তোমরা তোমাদের সর্দারের প্রতি দাঁড়াইয়া যাও'। (বুখারী ও মুসলিম) · কারও আগমনের সাথে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি? · সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে কারও আগমনের সাথে উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ একটি বিস্তারিত উত্তর প্রদান করেছেন, শরীয়াহর দলীলের উপর ভিত্তি করে, তাঁর এ মতামত উল্লেখ করা হলঃ · “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা খোলাফায়ে রাশেদীনের সমকালীন সালাফগণের কারোরই এই রীতি বা অভ্যাস ছিল না যে তাঁরা প্রতিবার নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) দেখামাত্রই উঠে দাঁড়িয়ে যেতেন, যেটা অনেক মানুষ করে থাকে । বরং আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “সাহাবায়ে কিরামের নিকট রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপেক্ষা কোন ব্যক্তিই অধিক প্রিয় ছিলো না। অথচ তাঁরা যখন তাঁকে দেখিতেন তখন দাঁড়াতেন না। কেননা, তাঁরা জানতেন যে, তিনি ইহা পছন্দ করেন না”। ( তিরমিযি ২৭৫৪, সহীহ তিরমিযিতে হাদীসটি আলবানী কর্তৃক সহীহ) কিন্তু তাঁরা তাঁর জন্যে দাঁড়াতে পারতেন যে বাইরে থেকে ফিরত, তাকে স্বাগত জানানোর জন্যে, যেমন বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইকরিমা’র জন্য উঠে দাঁড়ান, এবং তিনি আনসারগণকে বলেছিলেন যখন সা’দ বিন মুয়াজ এসেছিলেন, “তোমরা তোমাদের সর্দারের জন্য উঠে দাঁড়াও”; (বুখারী ৩০৪৩, মুসলিম ১৭৬৮)। আর এই ঘটনাটি ছিল যখন তিনি বনু কুরাইজার ব্যাপারে বিচারের রায় প্রদান করতে এসেছিলেন কারণ তারা বলেছিল যে তাঁর রায় তারা গ্রহণ করবে। মানুষের যা করা উচিত তা হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমকালীন সালাফগণের রীতি-পদ্ধতি অনুসরণ করা, কারণ তারা হলেন সর্বোত্তম প্রজন্ম এবং সর্বোত্তম বাণী হল আল্লাহর বাণী, এবং সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পথ নির্দেশনা। কেউ যেন মানব জাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির পথ নির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয়, কিংবা শ্রেষ্ঠ প্রজন্মের পথ নির্দেশনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে এর থেকে নিকৃষ্ট কিছু অনুসরণ করে। এবং নেতা কিংবা প্রধানগণ যেন সাধারণের মাঝে এমন কোন কিছুর অনুমোদন প্রদান না করেন যে তাকে দেখামাত্রই সাধারণ লোকদের উঠে দাঁড়াতে হবে, বরং মানুষের উচিত হল সহজ-সাধারণ আচরণের দ্বারা তাকে স্বাগত জানানো। আর দূর থেকে ভ্রমণ করে ফিরে এসেছে এমন লোকের ব্যাপারে উঠে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য যদি হয় তাকে স্বাগত জানানো তাহলে তা সুন্দর আচরণ। আর জনসাধারণের রীতিনীতি যদি এমন হয় যে, উঠে দাঁড়ানোর মাধ্যমে আগত ব্যক্তিকে সম্মান দেখানো হয় এবং যদি তারা উঠে না দাঁড়ায় তাহলে সে ব্যক্তি অপমানিত বোধ করে কিংবা সে ব্যক্তি সুন্নাহ অনুসারে আচরণ জানে না, সেক্ষেত্রে আগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানোই অপেক্ষাকৃত ভালো আচরণ, কারণ এর দ্বারা তাদের মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হতে পারে এবং তাদের অন্তর থেকে ঘৃণা ও বিদ্বেষ দূর করে দিবে। কিন্তু লোকটি যদি সুন্নাহ অনুসারে আচরণ সম্পর্কে অভ্যস্ত থাকে তাহলে উঠে না দাঁড়ানো তাকে অপমানিত করবে না। · · নবাগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে সেই কথা বলা হয়নি যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইহাতে আনন্দ পায় যে, লোকজন তাহার জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় স্থির হয়ে থাকুক, তবে সে যেন নিজের জন্য জাহান্নামে বাসস্থান নির্ধারণ করে নেয়”। (আবু দাউদ,তিরমিযি ২৭৫৫, আলবানী কর্তৃক সহীহ তিরমিযি)। এর মানে হল (একথা বলা হয়েছে সেই ব্যক্তির জন্যে) কারও জন্য উঠে দাঁড়ানো হল অথচ সেই ব্যক্তি নিজে বসে আছে, নবাগত ব্যক্তিকে স্বাগত জানানোর জন্য উঠে দাঁড়ানোর ব্যাপারে এই কথা বলা হয়নি। একারণেই উলামাগণ এই দুই ধরণের উঠে দাঁড়ানোর মধ্যে পৃথকীকরণ করেছে্ন, কারণ যারা নবাগত ব্যক্তিকে স্বাগত জানানোর জন্যে উঠে দাঁড়ায় তারা তার সাথে একইভাবে (দাঁড়ানো) অবস্থায় আছে কিন্তু কোন ব্যক্তি নিজে বসে আছে অথচ লোকেরা তার জন্যে উঠে দাঁড়ায় উভয় ঘটনা এক নয়। সহীহ মুসলিমে প্রমাণিত আছে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থতার দরুণ বসা অবস্থায় সালাতের ইমামতি করলেন, তাঁরা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলেন, তিনি তাঁদের বসতে বললেন এবং বললেন, “পারসিরা যেভাবে একে অপরকে সম্মান দেখায় সেভাবে আমাকে সম্মান প্রদর্শন করো না” [১]। আর তিনি নিজে বসা অবস্থায় তাদেরকে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করলেন, যেন সাহাবাগণের সাথে এতটুকু সাদৃশ্যও না থাকে যেভাবে পারস্য দেশের লোকেরা তাদের নেতাদের জন্য দাঁড়িয়ে অথচ তাদের নেতারা বসে থাকে। পরিশেষে, যত বেশি সম্ভব সালাফগণের আচরণ ও রীতিনীতি অনুসরণ করাই হল সর্বোত্তম আচরণ। যদি কোন ব্যক্তি এতে বিশ্বাস স্থাপন না করে এবং এই ধরণের আচরণে অভ্যস্ত না হয়, এবং যেভাবে (প্রচলিত পদ্ধতিতে) লোকেরা তাকে সম্মান দেখায় সেভাবে সম্মান প্রদর্শন না করাতে যদি সে আরও মন্দ কোন পরিণতির দিকে নিয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে আমরা কম ক্ষতির কাজটি করে বেশি ক্ষতির থেকে নিজেদের রক্ষা করব এবং তাই করব যা ছোট উপকারের চেয়ে বড় উপকার করে থাকে ”। - ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ’র উক্তি সমাপ্ত। · যে বিষয়টি এই আলোচনা আরও স্পষ্ট করে তুলতে পারে তা হল, সহীহাইনে আলোচিত কা’ব ইবন মালিকের ঘটনাটি, যখন আল্লাহ্ তাঁর এবং তাঁর দুইজন সঙ্গীর তাওবা কবুল করলেন, যেখানে বর্ণিত আছে, যখন কা’ব মসজিদে প্রবেশ করলেন, তালহা ইবন উবাইদাল্লাহ উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর দিকে দৌড়ে গেলেন এবং স্বাগত জানালেন অভিনন্দিত করলেন আল্লাহর ক্ষমার কারণে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ঘটনাকে প্রত্যাখান করেননি। এই ঘটনা নির্দেশ করে যে, আগত ব্যক্তির জন্যে উঠে দাঁড়ানো, তার সাথে হাত মিলানো এবং স্বাগত জানানো অনুমোদিত। এই বর্ণণাটিও অনুরূপ যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কন্যা ফাতিমার ঘরে প্রবেশ করলেন তিনি তাঁর জন্যে উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর হাত ধরলেন এবং তার নিজের বসার স্থানে তাকে বসালেন। এবং যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ফাতিমা রদিয়াল্লাহু আনহা আসতেন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত ধরতেন এবং তাঁর নিজের বসার স্থানে তাকে বসাতেন। তিরমিযিতে সহীহ রূপে চিহ্নিত। [১] জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ হতে পড়লেন। আমরা তাঁর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি বসে বসে সালাত আদায় করছিলেন। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু লোকদেরকে তাঁর তাকবীর উচ্চস্বরে শুনিয়ে দিচ্ছিলেন। তিনি আমাদের দিকে মনোনিবেশ করে আমাদেরকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেলেন। তিনি আমাদের ইশারা করলেন। তদনুযায়ী আমরা বসে গেলাম। আমরা তাঁর সাথে বসে সালাত আদায় করলাম। সালাম ফিরানোর পর তিনি বললেনঃ তোমরা পারস্য ও রুমের (এশিয়া মাইনর) লোকদের অনুরূপ করতে যাচ্ছিলে, তাদের বাদশাহরা বসে থাকে আর তারা দাঁড়িয়ে থাকে। তোমরা কখনো এরূপ করো না। সর্বদা তোমাদের ইমামদের অনুসরণ করবে। সে যদি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় কর। সে যদি বসে সালাত আদায় করে তোমরাও বসে সালাত আদায় কর। (মুসলিম ৮২৩ ) [২] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আহত হলেন। সাহাবাদের কিছু সংখ্যক লোক তাঁকে দেখতে আসলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম বসে বসে সালাত আদায় করলেন। তাঁরা তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় শুরু করলে তিনি তাদেরকে ইশারায় বললেনঃ তোমরা বসে যাও। তারা বসে গেল। সালাত শেষ করে তিনি বললেনঃ অনুসরণ করার জন্যই ইমাম নিযুক্ত করা হয়। যে যখন রুকুতে যাবে তোমরাও তখন রুকুতে যাবে। সে যখন মাথা তুলবে তোমরাও তখন মাথা তুলবে। সে যখন বসে বসে সালাত আদায় করবে তোমরাও বসে বসে সালাত আদায় করবে। ( মুসলিম ৮২১ ) নিষিদ্ধ কিয়াম বা দাঁড়ানো আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : অর্থাৎ, যে লোক কামনা করে যে, মানুষ তার সম্মানে দাঁড়িয়ে যাক সে যেন তার ঠিকানা আগুনে করে নেয়। (আহমাদ) আনাস রা. বলেছেনঃ অর্থাৎ, সাহাবায়ে কিরামের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অধিক প্রিয় আর কেউ ছিলেন না। তথাপি তারা তাঁকে দেখতে পেলে সম্মানার্থে দাড়াতেন না, কারণ তারা জানতেন এমনটি তিনি অপছন্দ করেন। ( আহমদ ও তিরমিযি) ১। হাদিস দুটি হতে এটা পরিস্কার বুঝা যায় যে, যে মুসলিম তার সম্মানার্থে মানুষের দাঁড়ানোকে কামনা করে, তাহলে এ কাজ তাকে (জাহান্নামের) আগুনে প্রবেশ করাবে। সাহাবায়ে কেরাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গভীরভাবে ভালবাসতেন। এতদসত্ত্বেও, তাঁকে তাদের সম্মুখে আসতে দেখলে দাঁড়াতেন না। কারণ, সে দাঁড়ানোকে তিনি খুব অপছন্দ করতেন। ২। বর্তমানে মানুষ একে অপরের জন্য দাঁড়াতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বিশেষ করে উস্তাদ যখন শ্রেণী কক্ষে প্রবেশ করেন অথবা ছাত্ররা তাকে কোথাও দেখতে পায় তখন তার সম্মানার্থে সকলে দাড়িয়ে যায়। কোনো ছাত্র না দাড়ালে তাকে তিরস্কার ও ধিক্কার দেয়া হয়। দাড়ানো কালে শিক্ষকের নীরবতা অথবা না দাড়ানো ছাত্রকে তিরস্কার করা এটাই প্রমাণ করে যে, তারা নিজেদের জন্য দাঁড়ানোকে পছন্দ করেন। যদি অপছন্দ করতেন তাহলে এসব হাদিস বলে দাড়ানোকে নিরুৎসাহিত করতেন। এবং যারা দাড়ায় তাদের নসীহত করতেন। এভাবে তার জন্য বারে বারে দাঁড়ানোর ফলে তার অন্তরে আকাঙ্খা সৃষ্টি হয় যে, ছাত্ররা তার জন্য উঠে দাঁড়াক। কেউ না দাঁড়ালে তার প্রতি অন্তরে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। উল্লেখিত হাদিসের বক্তব্য অনুযায়ী যারা দাড়িয়ে অপরকে সম্মান জানাচ্ছে তারা মূলত: সেসব মানুষ শয়তানের সাহায্যকারী, যারা নিজের জন্য এভাবে দাঁড়ানো পছন্দ করে। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে নিষেধ করে বলেছেন : অর্থাৎ, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না। (বুখারি)। ৩। অনেকে বলেন : আমরা শিক্ষক বা বুজুর্গদের সম্মানে দাড়াইনা বরং তাদের ইলমের সম্মানে দাঁড়াই। আমরা বলব : আপনাদের কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইলম এবং তাঁর সাহাবিদের আদব সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ আছে? সাবারাতো নবীজীর সম্মানে দাঁড়াতেন না। ইসলাম এভাবে দাঁড়ানোকে সম্মান প্রদর্শন বলে মনে করে না। বরং হুকুম মান্য করা ও আনুগত্যের মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সম্মান। সালাম করা ও হাত মিলানই ইসলাম সম্মত সম্মান। ৪। অনেক সময় দেখা যায়, মজলিসে কোনো ধনী লোক প্রবেশ করলে মানুষ তার সম্মানে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু দরিদ্র ব্যক্তির জন্য কেউ দাঁড়ায় না। এমনও হতে পারে, আল্লাহ তাআলার কাছে ঐ দরিদ্রের সম্মান সে ধনী ব্যক্তির চেয়ে বেশী। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন : অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাবান যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। ( সূরা হুজুরাত, ৪৯: আয়াত ১৩) অনেকে ভাবে যদি আমরা না দাঁড়াই তাহলে আগমনকারী মনে ব্যাথা পাবেন । তাদের এই বলে বুঝান দরকার যে, দাঁড়ানটাই সুন্নতের বিপরীত। বরং হাত মিলান, সালাম করাই সুন্নাত। শরিয়ত সম্মত কিয়াম বা দাঁড়ান অনেক সহিহ হাদিস ও সাহাবিদের আমল দ্বারা প্রমাণিত যে, আগমণকারীর অভ্যর্থনার জন্য দাঁড়ানো জায়েয। আসুন আমরা সে হাদিসগুলো বুঝতে চেষ্টা করি এবং সেমতে আমল করারও । ১। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর আদরের মেয়ে ফাতিমা রা. আপন পিতার খিদমতে আসলে নবীজী তার জন্য দাঁড়াতেন। অনুরূপভাবে যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে যেতেন, তখন তিনিও উঠে দাঁড়াতেন। এটা জায়েয এবং জরুরি। কারণ, এটি অতিথির সাথে সাক্ষাত ও তার একরামের জন্য। রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার অতিথিকে সম্মান করে। (বুখারি ও মুসলিম) তবে এটা শুধুমাত্র বাড়ীর মালিকের জন্য প্রযোজ্য অন্য কারো জন্য নয়। ২। অন্য হাদীসে আছে : অর্থাৎ, তোমাদের সর্দারের জন্য দাঁড়াও। ( বুখারি ও মুসলিম)। অন্য রিওয়ায়েতে আছে : (এবং তাকে নামিয়ে আন) এই হাদিসের কারণ হল : সা’দ রা. আহত ছিলেন। তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদিদের বিচার করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি গাধার উপর উঠলেন। যখন তিনি পৌঁছলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের বললেন : তোমরা তোমাদের সর্দারের জন্য উঠে দাঁড়াও এবং তাকে নামিয়ে আন। তাই তারা দাঁড়ালেন এবং নামিয়ে আনলেন। এখানে আনসারদের সর্দার সা’দ রা.-কে সাহায্য করার জন্য দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল, কারণ তিনি ছিলেন আহত। তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং আনসাররা ব্যতীত অন্য কোনো সাহাবি দাঁড়াননি। ৩। সাহাবি কা’ব ইবনে মালেক রা. সম্বন্ধে বর্ণিত আছে, তিনি মসজিদে প্রবেশ করলেন, সাহাবাগণ সকলে বসা ছিলেন। তিনি প্রবেশ করলে তালহা রা. তার তাওবা কবুল হয়েছে মর্মে সুসংবাদটি প্রদানের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে তার দিকে এগিয়ে গেলেন। তাবুক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করার কারণে কা’ব রা. ও তার দুই সাথীর সাথে বয়কট করা হয়েছিল। পরে তাদের তাওবা কবুল হয়। এখানে দৃশ্যত: দেখা যাচ্ছে তালহা রা. কা’ব রা.-এর উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়েছেন, প্রেক্ষাপটের বিচারে এ দাঁড়ানোতে দোষের কিছু নেই এবং এটা জায়েয। কারণ, এতে বিমর্ষ ব্যক্তিকে খুশি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এবং আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত প্রাপ্তিতে আনন্দ প্রকাশ করা. (সংগৃহীত)
Пікірлер: 7