নেক আমালিয়াত হাদিস : #
#মহানবী (সা.)-কে জানার প্রথম উৎস হলো কোরআন।#
#যেমন তাঁর সম্পর্কে তাঁর জীবনসঙ্গী আয়েশা (রা.)-এর কাছে জানতে চাওয়ার পর#
তিনি বলেছেন, কোরআনই তাঁর চরিত্র। (ইমাম বুখারি, আল আদাব আল মুফরাদ, হাদিস: ৩০৮)। #
কোরআনজুড়ে প্রসঙ্গক্রমে নবীজীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতির ছায়া পড়েছে। মক্কার কুরাইশদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন, যুদ্ধের নানান অনুষঙ্গ, অথবা নবীর স্ত্রীর নির্দোষিতা ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে তখনকার ঘটনার আলোকে। কোরআনের প্রাচীন তাফসির ও কোরআন নাজিলের প্রেক্ষাপট-সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস এবং হাদিসের বিচ্ছিন্ন সংকলনগুলোতে তাঁর জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনা বিধৃত হয়েছে। সেকালে রচিত ইতিহাসের আধার ও উপাদানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নবীজীবনের খণ্ড খণ্ড চিত্র। কিন্তু তাঁকে নিয়ে ধারাবাহিক জীবনী রচনার উন্মেষ ঘটেছে তাঁর ইন্তেকালের অন্তত ৫০ বছর পরে। কেননা নবীজি তখন নিজেই তাঁদের সামনে ছিলেন। এমনকি দূরে বা কাছের যাঁরা তখনো দেখেননি তাঁকে, তাঁদেরও সবার যেন একবার অন্তত দেখার সুযোগ হয়ে যায়, তাই তিনি বহু আগেই বিদায় হজের ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর তিরোধানের পর পরবর্তী প্রজন্মও সাহাবিদের এমন একটি বিরাট দলের সান্নিধ্য পেয়েছেন, যাঁদের প্রাত্যহিক জীবনের সব ইবাদত ও কাজকর্ম মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ মেনে বাস্তবায়িত হতো। তারপর সময়ের দূরত্ব যত বাড়তে থাকে, নবীজি সম্পর্কে জানার কৌতূহল বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি কেমন ছিলেন-এই প্রশ্নের আধিক্য মহানবীর জীবনকাহিনি রচনার পথ উন্মুক্ত করে দেয়। প্রজন্মান্তরে মহানবীকে দেখা ও তাঁকে জানার প্রবল ইচ্ছার কথা কি তিনিও জানতেন? যেমন তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের পরে উম্মতের মধ্যে আমার প্রতি এতটা ভালোবাসাসম্পন্ন লোক আসবে, যারা তাদের সম্পদ-পরিজনের বিনিময়ে হলেও আমাকে দেখতে চাইবে।’ (মুসলিম, সহিহ, হাদিস: ২৮৩২)। তো জীবিত সাহাবিগণ নবীজির বিবরণ তুলে ধরা শুরু করলেন, কখনো সংক্ষেপে, কখনো সবিস্তারে, আবার কখনোবা আংশিক। এভাবেই একসময় ধারাবাহিক জীবনী সামনে চলে এল।
হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবনী সম্পর্কিত আরও পড়জীবনীগ্রন্থের দুটি বাহু: মহানবী (সা.)-এর জীবনী আলোচনার প্রধানতম দুটি বাহু রয়েছে। একটি হলো ‘সিরাত’; যাকে ‘সিয়ার’ ও ‘মাগাজি’ও বলা হয়। সিরাত মানে জীবনী। আমরা মহানবী (সা.)-এর জীবনীর যে সাধারণ ধরনটি দেখি, অর্থাৎ জন্ম থেকে তাঁর জীবনের ধারাবাহিক ঘটনাবলির বিবরণ সেটিই ‘সিরাত’ নামে পরিচিত এবং এ-জাতীয় গ্রন্থকে সাধারণত সিরাতগ্রন্থ বলা হয়। তবে আরেকটা দিক আছে-নবীজির দৈহিক গঠন, আচরণ ও কার্যক্রমের বর্ণনা। একে বলে ‘শামায়েল’। শামায়েল রচনার ধারাটা শুরু হয় একটু পরে। শামায়েল গ্রন্থকারকগণ প্রথম দিকে কেবল নবীজির দৈহিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করার মধ্য দিয়ে তাঁর অবয়ব-প্রকৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করতেন। পরবর্তী সময়ে আরও বিস্তৃতি আকারে নবীজির আচার-আচরণ, ইবাদত-বন্দেগি, বিনয়-কোমলতা-এভাবে তাঁর ব্যক্তিজীবনের সব দিক উল্লেখ করা হতে থাকে। শামায়েলবিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থগুলো হলো ইমাম তিরমিজির (মৃ. ২৭৯ হি.) ‘শামায়েল তিরিমিজি’, ইমাম বাগাবির (মৃ. ৫১৬ হি.) ‘আল আনওয়ার ফিশ শামায়েল’, ইবনে কাসিরের (মৃ. ৭৭৪ হি.) ‘আল-ফুসুল ফি সিরাতির রসুল’ ও জালালুদ্দিন সুয়ুতির (মৃ. ৭৭৪ হি.) ‘শামায়িলুশ শারিফা’ এবং বর্তমান সময়ে সিরিয়ান লেখক সালেহ আহমাদ শামির (জন্ম ১৯৩৪) ‘মিন মায়িনিশ শামায়েল’, যা ইতিমধ্যে আকিক পাবলিকেশনস, ঢাকা থেকে ‘মুহাম্মাদ স.: ব্যক্তি ও নবী’ নামে অনুবাদিত হয়ে প্রকাশ পেয়েছে।
প্রথম যুগের রচনাবলি: প্রথম মহানবী (সা.)-এর জীবনী রচনা করেন কে-এই সময়ে এসে তাঁর নিশ্চিত সন্ধান পাওয়া দুরূহ। ১০৯২ সালে সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত ‘আসসিরাতুন নাবাবিয়াহ ফি যাওইল মাসাদিরিল আসলিয়া’ এ-বিষয়ক একটি প্রামাণ্যগ্রন্থ। ড. মাহদি রিজকুল্লাহ আহমাদ তাতে চোদ্দ শতকের মিসরীয় স্কলার ইবনে হাজার আসকালানির অভিমতকে প্রাধান্য দিয়ে প্রথম তিনজন রচয়িতার নাম ও রচনার উল্লেখ করেছেন।
এক. সাহল ইবনে হাসমা (রা.)। তাঁর জন্ম তৃতীয় হিজরিতে। কৈশরে তিনি মহানবী (সা.)-কে দেখেছেন এবং উমাইয়া খলিফা মুয়াবিয়ার আমলে (৪১-৬০ হি.) মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর সেই জীবনীর বিভিন্ন অংশ মৌলিক সূত্র আকারে নবম শতকের ঐতিহাসিক বালাজুরি রচিত ‘আনসাব’, ইবনে সাদ রচিত ‘তাবাকাত’, তাবারি রচিত ‘তারিখে তাবারি’ এবং ওয়াকিদির বিভিন্ন রচনায় পাওয়া যায়।
Негізгі бет মাওঃ মোঃ আবু সাঈদ তায়্যিবী রাজবাড়ী!আলোচনা বিশ্ব নবীর জীবনী গুরুত্বপূর্ণ বয়ান রয়েছে /Abu Saeed Tiybe
Пікірлер: 1