@BDSTV #মধুপূর্ণিমা #Modhupurnima
মধু পূর্ণিমা'র তাৎপর্য ও গুরুত্ব || মধু পূর্ণিমা ||Modhu purnima || সকল বৌদ্ধদের অবশ্যই জানা উচিত |
#bhikkhudhammananda
শুভ মধু পূর্ণিমা। বৌদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে এটি অন্যতম এক শুভ তিথি। বিশেষ করে বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমাতে এটি উদযাপিত হয়। বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি ভাদ্র মাসে এই উৎসব উদযাপন করা হয়। তাই এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা।
তবে বিশ্বে এটি ‘মধু পূর্ণিমা’ নামে পরিচিত। বুদ্ধ জীবনের নানা ঘটনা এবং দান, ত্যাগ ও সেবার নানা মহিমায় দিবসটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে বেশ গুরুত্ব বহন করে।
মধু পূর্ণিমার শুভ এ দিনটি বৌদ্ধরা নানা উৎসব, আনন্দ ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন। নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এদিন বুদ্ধ ও ভিক্ষুসংঘকে মধুদান করার জন্য উৎসবে মেতে ওঠেন। বিহারে দেখা যায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মধুদানের এক আনন্দঘন পরিবেশ। বিহারে সন্ধ্যায় বৌদ্ধকীর্তন ও পুঁথিপাঠ করা হয় এবং বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়।
আমরা জানি, মহাকারুণিক ভগবান বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর মোট ৪৫ বছর বর্ষাবাসব্রত পালন করেন অরণ্য, পর্বত, গুহা, বিহার ইত্যাদি নানা স্থানে। তার মধ্যে দশম বর্ষাবাস যাপন করেন পারিলেয়্য নামক বনে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিবাদ ও বিনয় সম্পর্কিত নানা অসন্তোষ আচার-আচরণের কারণে তিনি সেই পারিলেয়্য বনে গিয়েছিলেন। কোসাম্ভীর ঘোষিতারামে দু’জন পণ্ডিত ভিক্ষুর মধ্যে ক্ষুদ্র একটি বিনয় বিধান নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। তারা উভয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে সংঘভেদ করেন। স্বয়ং ভগবান বুদ্ধ তাদের এ মতবিরোধ মেটানোর জন্য শ্রাবস্তী থেকে সেখানে আসেন এবং বিরোধ মিটিয়ে দিয়ে পুন শ্রাবস্তীতে প্রত্যাবর্তন করেন। বুদ্ধ চলে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে আবার বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং একে অপরকে দোষারোপ করেন।
এতে তাদের অনুসারী ভিক্ষুসংঘের মধ্যেও বিরোধ দেখা দেয়। বুদ্ধ দেখলেন, তারা নিজেরা নিজেদের আত্মকলহে জড়িয়ে তাদের অনুসারীদের মধ্যে একটি বিভাজন তৈরি করে দেন, যা সংঘ ও সদ্ধর্ম-শাসনের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। বৌদ্ধ পরিভাষায় একেই বলে ‘সংঘভেদ’। তখন বুদ্ধ একাকী বসবাসের পরিকল্পনা করে বালুকারাম বিহারে চলে যান এবং তার শিষ্য ভৃগু স্থবির ও শিষ্যম্ললীকে নিয়ে চারিকাব্রত করেন
। পরে প্রাচীন বংশরক্ষক মৃগদায়ের দুই কুলপুত্রকে মৈত্রী ও মিলন সম্পর্কে উপদেশ দিয়ে পারিলেয়্য বনে চলে যান এবং সেই বনের একটি ভদ্রশাল রক্ষিত বৃক্ষমূলের বনসন্ডে বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান গ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি তিন মাস যাপন করেন, ধ্যান-সমাধি করেন। সে বনে ছিল নানা পশুপাখি ও জীবজন্তুর আবাস। বুদ্ধের অপরিমেয় মৈত্রী ও করুণার প্রভাবে বনের সেসব পশুপাখি ও জীবজন্তু তাদের হিংস্রতা পরিহার করে।
ভাদ্র মাসের এ পূর্ণিমার সঙ্গে বুদ্ধজীবনে বানরের মধুদানের এক বিরল ঘটনা জড়িয়ে আছে। সেদিনের বানরের মধুদান বৌদ্ধ ইতিহাস ও সাহিত্যে একটি নিছক ঘটনা মনে হলেও এ থেকে আমরা সেবা, ত্যাগ ও দানচিত্তের এক মহৎ শিক্ষা পেয়ে থাকি।
বনের একটি বানর হয়ে বুদ্ধকে দান দিয়ে যেখানে তার মহৎ উদারতা ও ত্যাগের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছে, তৃপ্তি পেয়েছে এবং আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছে, সেখানে আমরা মানুষ হয়েও আজ বিপন্ন মানুষের প্রতি সেই উদারতা, ত্যাগ ও দানের মহিমা দেখাতে পারছি না।
আজ বিবেকের কাছে আমাদের প্রশ্ন- মানবতা, সেবা আর ত্যাগে আমাদের চিত্তকে কি আমরা সেভাবে প্রসারিত করতে পারি না? মধু পূর্ণিমা আমাদের সবার জীবনে শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনুক। আমাদের হৃদয় ভরে উঠুক অপার মৈত্রী-করুণায় এবং দান, দয়া, সেবা আর অকৃত্রিম ভালোবাসায়। সব্বে সত্তা সুখীতা ভবন্তু- জগতের সকল জীব সুখী হোক। ভবতু সব্ব মঙ্গলং- সকলের মঙ্গল লাভ হোক। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হোক। বিশ্বে শান্তি বর্ষিত হোক।
Негізгі бет মধু পূর্ণিমা'র তাৎপর্য ও গুরুত্ব || মধু পূর্ণিমা ||Modhu purnima || সকল বৌদ্ধদের অবশ্যই জানা উচিত |
Пікірлер: 5