গানের গলা নেই বলেই গিটার ধরলেন যে শিল্পী
-----------------------------
[১] কোন রাখঢাক না রেখেই বললেন, 'আমার গানের গলা নেই তাই গিটার ধরেছিলাম'। কথা ছিল পরিবারের আর অন্য ভাইদের মতো সঙ্গীত শিল্পী হবেন। যেমন বড় ভাই ড. সারোয়ার জাহান (প্রয়াত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন), মোহাম্মদ রফিকুল আলম দেশের প্রথিতযশা সঙ্গীত শিল্পী। ভাইদের চর্চা দেখে নিজেও সঙ্গীত শিল্পী হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত হলেন হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পী। তাও যেনতেন নয়- এক্কেবারে সাচ্চা শিল্পী। যার হাতের স্পর্শে গিটার কথা বলে। যার টোকায় টোকায় মিষ্টি গন্ধ ঝরে পড়ে।
[২] মুহাম্মদ খালেকুজ্জামান- হাওয়াইয়ান গিটারের সুরেলা সুর আর মিষ্টি হাত যখন একাকার হয়ে যায় তখন তাঁর হাতে যে কোন গানই হয়ে উঠে সুখভোগ্য। আজ শুনবো মুহাম্মদ খালেকুজ্জামান এর বাজানো 'মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে'। গানটি অপ্রচলিত রাগ 'পরমেশ্বরী' তে সৃষ্টি করা বিখ্যাত গান একটি গান।
[৩] Mir Shahnewaz এই গানটি সম্পর্কে যেমনটি তথ্য তুলে ধরেছেন, যা হয়তো অনেকেরই জানা, আবার অনেকেরই অজানা। কৃতজ্ঞতা মীর শাহনাওয়াজ ভাই।
[৪] ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি’ গানটি বহুপ্রচলিত। শুনলে মনে হয় খুব সহজ সরল সুর। রাগ 'পরমেশ্বরী' তে করা হয়েছে গানটি। এটি সকালবেলার রাগ। গানটির আরম্ভের স্বরসঙ্গতি নিয়ে একটু তলিয়ে ভাবলে পরমেশ্বরী রাগ এর আভাস ধরা পড়ে- পঞ্চম বর্জ্য, কোমল নিখাদ, গান্ধার আর রেখাব। পরমেশ্বরী রাগটি কিন্তু প্রচলিত রাগ নয়, তারপরও কিছুটা জনপ্রিয়।
[৫] ১৯৫৫-৫৬ নাগাদ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বাংলা-হিন্দী ছবির পাশাপাশি তামিল ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার কাজে প্রায়ই মাদ্রাজ যাতায়াত করতেন। হয়তো কোন স্থানীয় শিল্পী বা যন্ত্রীর কাছে দক্ষিণ ভারতীয় এই ঠাট শুনে এর স্বরসঙ্গতির অন্তর্নিহিত স্মৃতিমেদুরতা ও বিষণ্ণতার সুর কোনওভাবে তাঁর মনে রেখাপাত করেছিল। পরবর্তীকালে ১৯৭০ সালের দিকে দক্ষিণ ভারতীয় এই ঠাটটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পণ্ডিত রবিশঙ্কর এটিকে জনপ্রিয় করেন, যা ‘পরমেশ্বরী’ রাগ হিসেবে পরিচিত হয়।
[৬] ১৯৫৭ সালে মারাঠি ছবি ‘নায়কিনিচা সজ্জা’তে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় লতাজিকে দিয়ে গাইয়েছিলেন ‘পরমেশ্বরী’ রাগ নির্ভর ‘নশিভি মাতে’, আর এই গানটির সুরেই ‘লুকোচুরি’ (১৯৫৮) ছবিতে নিজে গাইলেন ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি’।
Негізгі бет মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে//Muchhe Jawa Dinguli//Guitar tune by Muhammad Khalequzzaman
Пікірлер: 6