মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ও পরবর্তীকালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এবং বিপ্লবী মুকুন্দ দাসের বামদেব দর্শনের বিস্তারিত তথ্য " মহাপীঠ তারাপীঠ " ও " সাধু সান্নিধ্যে রবীন্দ্রনাথ " গ্রন্থে তুলে ধরেছেন ওই গ্রন্থদ্বয়ের লেখক বিপুল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের যোগীগুরু বহেরা বাবার সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন বিপুল বাবু। এই বহেরা বাবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বিবাহের দিন উপস্থিত থেকে সস্ত্রীক রবীন্দ্রনাথকে আশীর্বাদ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের গৃহ চিকিৎসক জে.এম.দাশগুপ্ত, যিনি বামদেবের শিষ্য রামনাথ অঘোরী বাবার সাথে রবীন্দ্রনাথের সাক্ষাৎ করিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি বিপুল বাবুর গুরু ভ্রাতা ছিলেন। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য হেমলতা ঠাকুর ( রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠা পুত্রবধু, যিনি বহুবছর রবীন্দ্রনাথকে কাছ থেকে দেখেছেন ), ড. রাধাকমল মুখোপাধ্যায়, প্রখ্যাত ডি এল রায়ের পুত্র দিলীপ কুমার রায়, প্রমুখদের সান্নিধ্যে এসেছেন বিপুল বাবু এবং তাঁদের কাছ থেকে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে দুর্লভ তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
স্বদেশী আন্দোলনের সময় চারণ কবি ও বিপ্লবী মুকুন্দ দাসের সহযোগী বিপ্লবী ও পরবর্তীকালের আধ্যাত্ম্য সাধক বিনয় কুমার শাস্ত্রীকে মুকুন্দ দাস তাঁর ও রবীন্দ্রনাথের তারাপীঠ তথা বামদেব দর্শনের কথা সবিস্তারে বলেছিলেন। বিনয় কুমার শাস্ত্রীর সান্নিধ্য ধন্য তাঁর শিষ্য সাধক শ্রী সুশীল কুমার দত্ত মহাশয় উপরোক্ত কাহিনি বিপুল বাবুকে বলেন।
নিরাকার ব্রহ্মের উপাসক হওয়া সত্বেও দ্বারকানাথ গৃহে মহা সমারোহে দুর্গা পূজা করতেন। এবং পিতার এই কর্মযজ্ঞে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথও সহযোগিতা করতেন..শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট ক্রিয়াযোগী ভূপেন্দ্রনাথ সান্যাল বামদেবের কৃপাধন্য ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে বামদেবের কথা রবীন্দ্রনাথ শুনে থাকতেই পারেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনে শ্রীরামকৃষ্ণ,স্বামী বিবেকানন্দ, বহেরা বাবা, বামদেবের শিষ্য রামনাথ অঘোরী বাবা, তারা মায়ের সাধিকা রাঙা মা প্রমুখের সান্নিধ্যে এসেছেন, তাই বাংলা তথা ভারত বিশ্রুত মহাপুরুষ বামদেবের সান্নিধ্য লাভের তিনি ইচ্ছুক হবেন এটাই স্বাভাবিক..
বিপ্লবী মুকুন্দ দাস কখনো কখনো রবীন্দ্রনাথের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসতেন। একবার সেই রকম সাক্ষাতে মুকুন্দ দাস বামদেবকে দর্শন করতে যাচ্ছেন জেনে রবীন্দ্রনাথও যাওয়ার মনস্থির করেন।
বামদেব দেবেন্দ্রনাথকে বলেছিলেন যে আশ্রমের জন্য তিনি জমি পেয়ে যাবেন আশ্চর্য ভাবে। সত্য ই " আশ্চর্য " ভাবে দেবেন্দ্রনাথ বিশাল জমি পেয়েছিলেন মাত্র একটি টাকার বিনিময়ে। এর প্রমাণ আজও পাওয়া যাবে বোলপুর সাব রেজেস্ট্রী অফিসে পুরাতন নথি ঘাঁটলে..
আধ্যাত্মিক উপলব্ধি, দর্শন ও প্রাপ্তি একান্তই ব্যক্তিগত সম্পদ, যা সাধারণত অনেকেই জনসমক্ষে প্রকাশ করেন না। মহাত্মা তারাক্ষ্যাপার সাথে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর যোগাযোগ ছিল, কিন্তু নেতাজী তাঁর কোন লেখায় এই কথা তুলে ধরেননি। নরেন্দ্রনাথ ( স্বামী বিবেকানন্দ ) বামদেবের দর্শনে এসেছিলেন, সেই কথা তিনি তাঁর কোন গ্রন্থে উল্লেখ করেননি। যদিও জানা যায় মুকুন্দ দাস তাঁর ও কবিগুরুর বামদেব দর্শনের উল্লেখ করেছেন তাঁর লেখা তাঁরই আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থে..
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল, কবিগুরু ও মুকুন্দ দাস ইংরেজি 1906 সাল ( বাংলা ১৩১৩ সন ) এ বামদেবকে দর্শন করেছিলেন। " আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার ".. গানটির রচনাকালও ইংরেজি 1906 সাল ( বাংলা ১৩১৩ সন )।
পরিশেষে জানাই, আমরা স্বনামধন্য লেখক বিপুল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের গ্রন্থে উল্লেখিত তথ্যর ভিত্তিতেই এই ভিডিও নির্মাণ করেছি। যদি করো এর সত্যতা নিয়ে সংশয় জাগে, তাহলে সে প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য হল -
" মহাপীঠ তারাপীঠ " গ্রন্থের খন্ডগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। প্রচুর মানুষ ওই গ্রন্থ পড়েছিলেন ও এখনও মানুষ পড়ছেন। তাছাড়া শুধু তো এই গ্রন্থ নয়, " সাধু সান্নিধ্যে রবীন্দ্রনাথ " নামে আলাদা একটি গ্রন্থও লিখেছেন তিনি। সেখানে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বামদেব দর্শনের তথ্যমূলক বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন তিনি। উপযুক্ত তথ্য ছাড়া এই রকম গ্রন্থ লেখা কি সম্ভব? আর তিনি যদি অসত্য তথ্য লিখতেন তাহলে ঠাকুর পরিবার বা কোন রবীন্দ্র গবেষক- গুনীজনের তরফ থেকে নিশ্চয়ই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হতো, কোন পদক্ষেপ নেওয়াও হতে পারতো কিন্তু সেরকম কোন কিছুই ঘটেনি।
ধন্যবাদ। 🙏
মা ত্বং হি তারা চ্যানেল
Негізгі бет মুকুন্দদাস ও রবীন্দ্রনাথ কি দেখে চরম বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন ?
Пікірлер: 613