একসময় আমি বৈশালী নগরীতে প্রচন্ড অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। মাঠ-ঘাট-ক্ষেত সব শুকিয়ে যায়। চাষাবাদ ও শস্য উৎপাদন বন্ধ করা হলো। ফলে নগরীতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।অনাহারে প্রচুর লোক মৃত্যুবরণ করে। শবদেহ নগরের বাইরে নিক্ষিপ্ত করা হলো। পচগন্ধে অনেক অমনুষ্য-পিশাচাদি নগরে প্রবেশ করলো। অমনুষ্যের উপদ্রবে আরো অনেক লোক মারা গেল। বায়ু দূষণের ফলে শুরু হয় মহামারি। এতে ও প্রচুর মানুষ ও জীবজন্তুর প্রাণহানি হতে লাগলো। তারপর বৈশালীবাসী রাজার কাছে গিয়ে নিবেদন করল।মহারাজ,নগরে ত্রিবিধ ভয় উৎপন্ন হয়েছে। পূর্বের সপ্ত রাজবংশের রাজত্বকালে এরূপ দুর্দশা কখনো উৎপন্ন হয়নি। রাজার অধার্মিকতার কারণে এই দুর্দশা হচ্ছে কি না তা জানার জন্যে রাজজ্যোতিষীকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। জ্যোতিষী গণনা করে বললেন, এতে রাজার কোনো দোষ নেই। তারপর কিভাবে এই দুর্দশা দূর করা যায়। তা নিয়ে সকলে চিন্তা করতে লাগলেন। চিন্তা করে সকলে স্থির করলেন যে,একমাত্র সর্বলোকহিতানুকম্পী, মহাঋদ্ধি ও মহানুভবতাসম্পন্ন ভগবান বুদ্ধের আগমনেই এ দুর্দশা দূর হবে।অতঃপর প্রজাদের মঙ্গলের কথা ভেবে রাজা ঠিক করলেন , ভগবান বুদ্ধকে বৈশালীতে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসবেন।রাজা ভাবলেন , বুদ্ধ এলে বৈশালীর মানুষদের দুর্দশা কেটে যাবে , প্রাণ রক্ষা পাবে , মনােবল ফিরে পাবে এবং সমস্ত ভয় ও অমঙ্গল কেটে যাবে । বুদ্ধ সেসময় রাজগৃহে অবস্থান করছিলেন । বৈশালীর রাজা তখন ভগবান বুদ্ধকে নিয়ে আসার জন্য লােক পাঠালেন দুইজন লিচ্ছবি কুমার সৈন্যবাহিনী ও উপঢৌকনসহ বুদ্ধকে আনতে যাত্রা করলেন।লিচ্ছবি কুমারগণ বুদ্ধের নিকট উপস্থিত হয়ে অভিবাদনপূর্বক জানালেন , “ ভন্তে ! আমাদের নগরে ত্রিবিধ ভয় উৎপন্ন হয়েছে।যদি করুণার আধার ভগবান করুণাবশত বৈশালীতে একবার পদর্পণ করেন , তা হলে আমাদের অশেষ কল্যাণ সাধিত হবে।বৈশালীবাসীর প্রতি অনুকম্পাবশত ভগবান বুদ্ধ নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন এবং বৈশালীতে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন । বৈশালীবাসীসহ রাজা ও রাজঅমাত্যগণ অতি সমারােহে পূজা ও সৎকার করতে করতে ভগবান বুদ্ধকে স্বরাজ্যে নিয়ে যান।
ভগবান বুদ্ধ বৈশালী পৌঁছলে দেবরাজ ইন্দ্র দেবতাপরিবেষ্টিত হয়ে ভগবানকে অভ্যর্থনা করতে আসলেন।দেবগণের আগমনে । অমনুষ্যগণ পালিয়ে গেল । অতঃপর ভগবান বুদ্ধ আনন্দ স্থবিরকে ডেকে বললেন , “ আনন্দ , এই রতন সূত্র শিখে লিচ্ছবিদের নিয়ে বৈশালী নগর ঘুরে ঘুরে আবৃত্তি কর।এই সুত্রের প্রভাবে বৈশালীর দুর্ভিক্ষ , মহামারি ও ভয় দূর হয়ে যাবে । ” বুদ্ধের নির্দেশে আনন্দ স্থবির রতন সূত্র আবৃত্তি শুরু করলেন এবং বুদ্ধের ব্যবহৃত পাত্রে জল নিয়ে নিঞ্চন করতে লাগলেন।সর্বার্থসাধক রতনসূত্র পাঠে রােগভয় , অমনুষ্য ভয় এবং দুর্ভিক্ষভয় এই ত্রিবিধ ভয় দূর হয়ে যায়।মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়।আবার মাঠে মাঠে শস্যের সমারােহ ঘটে।বৈশালীবাসীর জীবনে শান্তি ফিরে এল । নগরের মানুষ আনন্দে উৎফুল্ল।সবাই ভগবান বুদ্ধের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।সবাই করজোড়ে বুদ্ধের সম্মুখে এসে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন । এ হলাে রতন সুত্রের পটভূমি।
মরণানুস্মৃতি ভাবণা : • মরণানুস্মৃতি ভাবণা-ভদন...
subscribe: / @bangladeshbuddhistmed...
• Video
Негізгі бет রতন সূত্র। ভদন্ত এস.লোকজিৎ থের(পালি ও বঙ্গানুবাদ) Raton Sutra।S.Lokajith Thero(pali & Bengali)
Пікірлер: 128