১. হেরিটেজ রিসোর্ট
চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যে সময় কাটানোর জন্য দেশের রিসোর্টগুলো বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নরসিংদী জেলার মাধবদীর নওপারায় অবস্থিত তেমনি এক রিসোর্টের নাম হেরিটেজ রিসোর্ট (Heritage Eco Resort)। প্রায় ১৫০ বিঘা জায়গা জুড়ে নির্মিত হেরিটেজ রিসোর্টে অবকাশ যাপনের সুবিধার্থে রয়েছে আধুনিক কটেজ, ওয়াটার ভিলা, পুল ভিলা, ওয়েভ বিচ, সুইমিং পুল, জীম, স্পা, মাল্টি কুজিন রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টার, কনফারেন্স হল, কালচারাল হল সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের সুব্যবস্থা।
সবুজে মোড়ানো হেরিটেজ রিসোর্টকে ঘিরে তৈরি লেকে রয়েছে বোট রাইডিং ও ফিশিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়া ছোট বাচ্চাদের জন্য আছে কিডস জোন, কিডস ওয়াটার জোন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেইমস জোন এবং খেলার মাঠ সহ নানা আয়োজন।
। নরসিংদী রেলস্টেশন থেকে বাস কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে হেরিটেজ ইকো রিসোর্ট যেতে হবে। আর বাসে ঢাকা টু সিলেট মহাসড়কে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও সিলেটগামী বাসে হেরিটেজ রিসোর্টের কাছে নামতে পারবেন। কাঁচপুর অথবা টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ, ঘোড়াশাল হয়ে নরসিংদী যেতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।
২. সোনাইমুড়ি টেক
নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার বাগাঘ ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়ায় লালমাটির শহর সোনাইমুড়ি টেক (Sonaimuri Tek) । লাল মাটির পাহাড়ি টিলা, সমতল ভূমির বসতবাড়ি, পাখির কিচিরমিচির ও অপার সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ সোনাইমুড়ি বিনোদন পার্কে ছুটির দিনে থাকে দর্শনার্থীদের ভীড়। নরসিংদী থেকে শিবপুর যাওয়ার পথে নজরে পড়বে গাছ গাছালীতে ঘেরা অসংখ্য লাল মাটির টিলা। টিলার উপর থেকে পাহাড় ও সমতলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সকলকে মুগ্ধ করে। লাল মাটির এই টিলার মাঝ দিয়ে চলে গিয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। শুটিং স্পট হিসেবে জনপ্রিয় এই জায়গায় প্রায়ই বিভিন্ন নাটক ও সিনেমার শুটিং হয়ে থাকে। এছাড়া শিশুদের জন্য সোনাইমুড়ি টেকে রয়েছে বেশ কিছু বিনোদনের ব্যবস্থা।
কিভাবে যাবেন।
নরসিংদী থেকে সোনাইমুড়ি টেক বিনোদন পার্কের দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার। নরসিংদী থেকে শিবপুরের কুন্দেরপাড়া পৌঁছে রিক্সায় চড়ে সোনাইমুড়ি টেক বিনোদন পার্কে যেতে পারবেন।
৩. উয়ারী-বটেশ্বর
নরসিংদীর বেলাবো ও শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত উয়ারী ও বটেশ্বর নামে দুটি গ্রাম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। ধারণা করা হয় এটি মাটির নিচে অবস্থিত একটি দুর্গ-নগরী। বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী এটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো।
তবে ২০০০ সালে আবিষ্কৃত কিছু প্রত্ন নিদর্শনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যাণ্ডস এবং নিউজিল্যাণ্ড তিনটি দেশের পরীক্ষাগারে কার্বন-১৪ পরীক্ষার প্রেক্ষিতে উয়ারীর বসতিকে খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০ অব্দের বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, উয়ারী-বটেশ্বর ছিল একটি সমৃদ্ধ, সুপরিকল্পিত, প্রাচীন গঞ্জ বা বাণিজ্য কেন্দ্র। "সৌনাগড়া " যা গ্রিক ভূগোলবিদ, টলেমী তার বই " জিওগ্রাফিয়াতে" উল্লেখ করেছিলেন
উয়ারী-বটেশ্বরে প্রত্ন-বস্তু খননে প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন দুর্গ-নগর, বন্দর, রাস্তা, পার্শ্ব-রাস্তা, পোড়ামাটির ফলক, স্বল্প-মূল্যবান পাথর ও কাচের পুঁতি, মুদ্রা-ভাণ্ডারসহ উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। উল্টো-পিরামিড আকৃতির স্থাপত্যটি নিয়েও বিশেষজ্ঞ স্থপতিরা ইতোমধ্যে গবেষণা শুরু করেছেন। এখানে পাওয়া চারটি পাথুরে নিদর্শন প্রত্নপ্রস্তরযুগের বলে কেউ কেউ মনে করে।
ঢাকা থেকে বাসে চড়ে নামুন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাসষ্ট্যান্ডে। সেখানে রিক্সাওয়ালাকে বটেশ্বরের হানিফ পাঠান বা হাবিবুল্লাহ পাঠানের নাম বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে। রিকশা ভাড়া লাগবে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
৪.
লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ডাংগা নামক এলাকায় অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। যা স্থানীয়দের কাছে উকিল বাড়ি নামে বেশ পরিচিত
লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িটি দ্বিতল বিশিষ্ট্য একটি ভবন। ভবনের মেছেতে কষ্টি পাথর দিয়ে ঢালাই করা। ছোট্ট একটি কারুকার্য খচিত দালান, বাগানবাড়ি, সাঁন বাঁধানো পুকুর ঘাট, পূজো করার জন্য পুকুরের চারপাশে তিনটি মঠ বা মন্দির ছিল।
জমিদার বাড়ির সবগুলো স্থাপনা মোটামুটি বেশ ভালো অবস্থাই আছে। শুধু পুকুরের চারপাশের মঠ বা মন্দিরগুলোর ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে একটি এখনো পুকুর ঘাটের কাছে মোটামুটিভাবে টিকে আছে।
কিভাবে যাবেন : নরসিংদির পাঁচদোনা মোড় থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় ডাংগা বাজার পৌঁছে রিক্সা কিংবা পায়ে হেঁটে অনায়াসে উকিলের বাড়ি বা লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িতে চলে যেতে পারবেন।
৫. ড্রিম হলিডে পার্ক
নরসিংদী জেলায় গড়ে উঠা বিশ্বমানের থিম পার্ক ড্রিম হলিডে পার্ক (Dream Holiday Park)
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর পাঁচদোনার চৈতাবাতে মনোরম এই ড্রিম হলিডে পার্কটির অবস্থান। ছোট-বড় সবার জন্যই রয়েছে আলাদা সব রাইড।
ঢাকা থেকে মাত্র ঘণ্টা খানেকের দূরত্বে বলে ইতিমধ্যেই এ পার্কটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
৬০ একর জমির ওপর নির্মিত এ পার্কে রয়েছে নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল, অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, পার্কে শিশু-কিশোরদের জন্য একাধিক রাইডস, সুবিশাল লেক, হংসরাজ প্যাডেল ও জেট ফাইটার বোট, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম ক্যানেল, রকিং হর্স, ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা ও সরকার প্রদত্ত নিরাপত্তা কর্মীর তত্ত্বাবধানে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশ। রয়েছে বিশাল গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, নিজস্ব কটেজ ও সুপ্রশস্ত বাংলো
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৬ টা ৩০ মি. এর পর টিকিট বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।
ড্রিম হলিডে পার্কে কীভাবে যাবেন :
রাজধানী ঢাকার কমলাপুর, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে যাওয়া যায়। ৩০ মিনিট পরপর বাস পাবেন। এ ছাড়া ঢাকা-সিলেট বিভাগের যে কোনো বাসে উঠলেই এ পার্কে পৌঁছানো যাবে
Негізгі бет Top 5 beautiful place in Narsingdi | নরসিংদী জেলার সেরা ৫ দর্শনীয় স্থান
Пікірлер: 4